নার্গিস কেমন আছ? আজ তোমায় দেখলাম ন্যশনাল মার্কেটে তোমার বড় বোন এর সাথে মার্কেটিং করতে,তোমার বড় বোন ইশারায় আহবান জানাল তোমাদের মার্কেটিং-এ অংশ নিতে কিন্তু আমি গেলাম না। আশে পাশে তোমার বর্তমান স্বামী থাকতে পারে এ ভয়ে দ্রুত তোমাদের দোকানটি অতিক্রম করলাম। তুমিত আমায় তোমার তীক্ষ্ন চাহনীতে অতিতের সব ভুলে যাওয়া স্মৃতিতে নাড়া দিলে। বাসায় এসে স্টান হয়ে শুয়ে আমার স্ত্রীর চোখকে ফাকি দিয়ে তোমার স্মতি রোমন্থন করলাম।
সবে মাত্র উচ্চমাধ্যমিক ভর্তি হলাম,কলেজ ছিল বাড়ী হতে অনেক দুরে,সকাল আটটায় কলেজে যাত্রা করে দশটায় এবং তিনটায় বাড়ীতে যাত্রা করে পাঁচটায় পৌছা ছিল নিত্য দিনের রুটিন ওয়ার্ক। কলেজে যাওয়া আসার কান্তি মেটাতে পড়ালেখার সময় বয়ে যেত।গ্রাম্য
মেঠো পথ অতিক্রম করার যান্ত্রিক কোন বাহন ছিলনা, রিক্সা ভ্রমন ছিল ব্যয়বহুল, কলেজের কোন হোস্টেল ছিলনা যে সেখানে গিয়ে উঠব, নিকটবর্তী কোন আবাসিক ঘর নিয়ে থাকার ও ব্যবস্থা নাই, পড়ালেখার ভবিষ্যৎ অন্ধকার দেখতে লাগলাম। অনোন্যপায় হয়ে এক বন্ধুকে এক দেড় কিলোমিটার এর সীমানায় একটি লজিং খুজে দেয়ার জন্য অনুরোধ করলাম। বন্ধু দীর্ঘ এক মাস পর অনেক খোজাখোজিতে সীতাকুন্ড থানার গোলাবাড়ীয়া গ্রামের আলম দারোগার বাড়ীতে লাইনম্যান কমর কদর এর পরিবারে একটি লজিং এর ব্যবস্থা করে দেয় অর্থাৎ তোমাদের বাড়ীতে।
পরিচয় দেয়া-নেয়ায় প্রথম দিন অতিবাহিত হল। লাইন ম্যান কমর কদর দুই বিয়ে করেন, প্রথম স্ত্রীর কোন সন্তান নেই,তিন ছেলে দুই মেয়ে সকলেই দ্বিতীয় স্ত্রীর গর্ভজাত। এক মেয়ে ও এক ছেলে আমার পড়ানোর আওতায় ছিলনা। তিনজন কে আমার পড়াতে হবে। তোমার বয়স তখন আনুমানিক তের কি চৌদ্দ হলে ও দেখতে পরিপূর্ণা যৌবনপ্রাপ্তা মেয়ের মত , বক্ষ প্রায় দৃশ্যমান,সুশ্রী চেহারা, কোকড়ানো চুল খাড়া নাক, তীক্ষ্ন è চোখের চাহনী, মাঝারী নিতম্ব সব মিলিয়ে গ্রামের একজন সর্বোৎকৃষ্ট সুন্দরী মেয়ে হিসাবে তুমি উল্লেখযোগ্য।পরিচয়কালীন তোমার মুচকি হাসি যেন এখনো আমায় উত্তেজিত করে।প্রথম দেখার দিন হতেই আমি তোমার প্রতি কেমন যেন দুর্বলতা বোধ করতে থাকি।তোমার হাটার স্টাইল,কথা বলার ঢং, তাকানোর তীক্ষ্নতা আমাকে দিন দিন ঘায়েল করতে থাকে। মাঝে মাঝে ইচ্ছা হয় বুকের সাথে লেপটে ধরি,বুকের উপর দৃশ্যমান বস্তু দুটিকে সজোরে মন্থন করি,গোলাপি গাল দুটোকে চুম্বনে চুম্বনে ভরে দিই,না পারিনা কিছুতেই আমার সাহস হয়ে উঠেনা।আমি এক প্রকার রোগ গ্রস্থ হয়ে পরলাম, সারাক্ষন তোমাকে নিয়ে ভাবতাম অথচ তুমি সেটা জানতেনা।বিকালে বন্ধুদের নিয়ে আড্ডা দিতাম হাসি তামাসা অনেক করতাম কিন্তু আমার ভিতরে চলত তোমারই কল্পনা।সকাল আর রাত্রে পড়ার ছুটির পর তোমাকে ভাবতে ভাবতে আর আমার পড়া হতনা, যেখানে ভালভাবে লেখা পড়ার জন্য লজিং নিলাম সেখানে লেখা পড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হল।এভাবে প্রথম বর্ষ চলে গেল,প্রথম বর্ষে ফাইনালে খুব খারাপ ফলাফল করাতে গার্জিয়ানদের বকুনি শুনতে হল। মনে মনে ভাবলাম তোমার কোন সুরাহা না হলে আমার ইন্টারমিডিয়েট পাশ করা হবেনা। হয়ত লজিং এ থাকব নয়ত চলে যাব।সুযোগের অপেক্ষায় থাকলাম।
একদিন সে সুযোগ আমায় ধরা দিল, তোমার এক ভাই দীর্গ এক মাইল দুরে ধানের ক্ষেতে কামলাদের জন্য চা ও পান্তাভাত নিয়ে গেছে,অন্য ভাই ততদুরে বাজার করার জন্য গেছে, বড় দুই ভাই বোন পুর্ব হতে বাড়ী ছিলনা,তদপুরি কাচারীতে মুরব্বিদের কেউ সাধারনত আসেন না।
তাছাড়া কাচারী হতে ঘরের দুরত্ব প্রায় একশত ফুট। কাচারীতে আমি আর তুমি, পড়ার ফাকে আমি তোমার গা ঘেসে পাশে দাড়ালাম, মাথায় আলতু করে হাত দিলাম, কিছু বললে না, হাত আস্তে আস্তে পিঠে নামালাম কামিছের পিছনে ব্লাউজের যে অংশ খালি আছে তাতে হাত রাখলাম তাতেও আপত্তি না পেয়ে আমার সাহস বেড়ে গেল, প্রচন্ড উষ্ণতাবোধ করতে লাগলাম,আমার প্রেসার সম্ভবত দুইশত ছাড়িয়ে গেছে,তুমি নির্বিকার হয়ত মনে মনে তুমি আমার ক্রিয়ায় প্রতিক্রিয়া জানাতে চাইছিলে কিন্তু লজ্জায় পারছিলেনা,তুমি ও উষ্ণতাবোধ করছিলে কিন্তু প্রকাশ করছিলেনা। হঠাৎ তোমার মা ডাক দিল নার্গিস কি করছ? তোমার পড়ার আওয়াজ শুনছিনা কেন? বললে অংক করছি, অথচ তোমার সামনে সমাজ বিজ্ঞানের বই, অংক করছিলেনা। আমি বুঝে গেলাম তোমার মনোভাব ,আমি আর ও সাহসি হয়ে আস্তে করে হাত বুকে নিয়ে গেলাম, তোমার সদ্য ফোটা স্তন দুটোকে মথিত করতে লাগলাম,আরামে তুমি উপুড় হয়ে রইলে,কোলে তুলে নিয়ে খাটে শুয়ালাম,সমস্ত শরীর কে দলীত মথিত করলাম,চরম উত্তেজনায় তুমি ঘন ঘন নিঃশ্বাস নিচ্ছ,আমি ও উত্তেজিত আর সহ্য হচ্ছিল না অবশেষে আমরা কিছুক্ষনের জন্য আদিম খেলায় মত্ত হয়ে গেলাম।তুমি প্রথম মিলনে ব্যাথায় ককিয়ে উঠেছিলে,আনন্দ পেয়েছিলে তার চেয়ে বেশী।
আমাদের প্রথম প্রেম অভিসার এই ভাবে শেষ হল, সেই হতে আমরা সময় ও সুযোগ বুঝে প্রায় অবশ্যই প্রতি শুক্রবার সহ সাপ্তাহে তিন চারদিন মিলিত হতাম,আমি তোমাকে প্রচন্ড ভালবাসতাম তুমি ও আমাকে। সাহস করে তোমার মা-বাবাকে আমাদের ভালবাসার কথা খুলে বললাম,তারা আমার মা-বাবার সাথে আলোচনা করে তোমার মতামত সহ আমাদের কে গ্রীন সিগন্যাল দিলেন কিন্তু তোমার বড় বোনের বিয়ে না হওয়াতে এ আলোচনা আমাদের মা-বাবা এবং আমরা দুজনের মধ্যে সিমিত ছিল। যৌবনের স্বাদ নির্দিধায় উপভোগ করার জন্য আমরা গোপনে ছোটদারোগার হাট আকদ করলাম। আমরা হয়ে গেলাম স্বাধীন দম্পতি।সামাজিক কোন আনুষ্ঠানিকতা এবং স্বিকৃতি ছাড়া গার্জিয়ানদের অপ্রকাশিত সম্মতিতে আমাদের দাম্পত্য জীবন চলল ছয় বছর পর্যন্ত। এর মধ্যে আমি বি এ পাস করলাম, হন্যে হয়ে তোমাকে পাওয়ার জন্য চাকরীর খোজ করতে লাগলাম, না কোথাও চাকরী পেলাম না।তোমার অনেক চাওয়া পাওয়া পুরনে ব্যর্থ হলাম। এর মধ্যে আমাদের বাবা মারা গেলে আমাদের আইনত গার্জিয়ানের পদ দখল করল আমাদের বড় ভাইয়েরা,আমার গার্জিয়ানের ইচ্ছা বউ বি এ পাস হতে হবে, তোমার গার্জিয়ানের ইচ্ছা জামাই ধনশালী হতে হবে। উভয় গার্জিয়ান এক মেরুতে মিলিত হতে কোনভাবেই সম্মত নয়।
এর মধ্যে ঘটে গেল দুর্ঘটনা,আমি তোমার সাথে দেখা করতে গেলাম,বড় বোন ছাড়া বাড়ীতে কেউ নাই,বড় বোন আমাদের ভালবাসায় সম্মত ছিল বিধায় ভীত না হয়ে তোমার সাথে দেখা করলাম,বড় বোন নিজে বাইরের সকল দরজা বন্ধ করে পাকের ঘরে চলে গেল ভিতরে আমরা দুজন, আলাপের এক পর্যায়ে আমরা আদিম তৃষ্ণা মেটাতে দিগম্বর হলাম ,ঠিক মাঝামাঝি সময়ে কোত্থেকে তোমার ভাই দিদার এসে আমাদের সামনে দাড়াল, তুমি দিগম্বর অবস্থায় কোথায় লুকালে বুঝতে পারলামনা,আমি নিজেকে কোন প্রকারে সামলিয়ে নিলাম। মানসিক ভাবে অপমানিত হলে ও ভাই কতৃক অন্য কোন অপমানের শিকার হয়নি,তবে রাগের বশবর্তী হয়ে পশ্রয় ও সুযোগ দেয়ার জন্য বড় বোনকে এক থাপ্পর বসিয়ে দিল ।তোমার ভাই দিদারকে বুঝাতে চাইলাম আমরা বৈধ স্বামী স্ত্রী গোপনে আমরা বিয়ে করেছি , কাবিন চাইল কিন্তু দেখাতে পারিনি, আমরা আকদ করেছিলাম শুধু দৈহিক মিলন নিরাপদ করার জন্য আর তোমাকে বিরতিহীন চাহিবা মাত্র পাওয়ার জন্য, তোমাকে হারাতে হবেনা এ দৃঢ়তায় আমি কাবিন করার কখনো উৎসাহী হয়নি,কাবিনত হবেই,বরং কাবিন করলে দৈত কাবিনের পাল্লায় পরে যাব।তুমি সাহস করে কাবিনের কথা ভাইকে বললে না। সেদিন এমন লজ্জাজনক পরিস্থিতিতে পরার কারনে দীর্ঘ চার মাস তোমাদের বাড়ীমুখী হয়নি।পরে খবর পেয়েছি ভায়েরা সবাই আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে দৃঢ় ও অটল সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমার কাছে তাদের বোন বিয়ে দেবেনা। তুমি ও সেদিন আমাদের গোপন বিয়ে ও দৈহিক সম্পর্ক অস্বিকার করলে, ভুলে গেলে হোমিও সেবনে এবর্শনের কথা।অথচ এই এবর্শনের কথা তোমার ছোট মা ও আপা জানত। ধনবান স্বামীর লোভ এবং আমার বেকারত্ব তোমাকে আমার ভালবাসা ভুলিয়ে দিল।
এ চার মাস আমার ভালবাসার মরনকাল হিসাবে বিবেচিত। দিদারুল ইসলাম টিটু নামে জনৈক কুয়েত প্রবাসি তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এল।রমজানের ঈদের আগে আগে সোনার হার,দামী শাড়ী, নানাবিধ উপহার সামগ্রী উপঢ়ৌকন হিসাবে তোমার জন্য পাঠিয়ে দেয়া হল। আমার ছয় বছরের দাম্পত্য জীবন,ভালবাসা,ছোট ছোট ্উপহার ঐ দিদারের উপহারের কাছে হার মানল।তুমি ও খুশিতে গদগদ হয়ে গেল।তুমি একটু ও ভাবলেনা যে আমি তোমার স্বামী, হ্যাঁ আমিই তোমর জীবনের প্রথম স্বামী, আকদ ও সামাজিকতা দুজন নারী-পুরুষের দৈহিক সম্পর্ককে সবার সামনে তুলে ধরার একটা মাধ্যম মাত্র,যে সম্পর্ক মনের টানে ভালবাসায় গড়ে উঠে তা আকদ ও সামাজিকতার বহু উর্দ্ধে।আমাদের আকদ ও ছিল ,মনের টান ও ছিল,ছিলনা শুধু বাহ্যিক প্রকাশের সামাজিকতা, তবে কোন কারনে আমরা বিচ্ছিন্ন হলাম তার কারণ আমার কাছে এখনো বোধগম্য নয়। তুমি কিভাবে পারলে একজন স্বামীকে তালাক না দিয়ে আরেকজন স্বামী বরন করতে, পরপুরুষের শয্যাসংগী হতে? ধিক তোমাকে।
আমি তোমার বিরহে একাকীত্ব বরন করিনি,মজনু সেজে তোমার জন্য রাস্তায় রাস্তায় পাগলের মত কাদিনি,তোমার বিরহে হইনি দেবদাসের মত ভবঘুরে,স¤পূর্ণ স্বাভাবিক থেকে তোমার চলে যাওয়া প্রত্যক্ষ করেছি,এক ফোটা চোখের জল ও ফেলেনি,তোমাকে হারানোর বেদনা আমার পৌরুষ কে এতটুকু দুর্বল করতে পারেনি।
আমি বিয়ে করলাম,তোমার রূপ সৌন্দর্যের অনেক বেশী রূপসী ,দেহ ও মননে পুত পবিত্র,নামাযী ,গ্যাজুয়েট, পারিবারিক স্ট্যাটাস তোমাদের চেয়ে ভাল, একজন পুরুষ ভাল ¯ত্রী বলতে যতগুন একজন মহিলার থাকা দরকার মনে করে সব আমার স্ত্রীর মধ্যে বিরাজমান। আমি তাকে প্রচন্ড প্রচন্ড ভাবে ভালবাসি। ছেলে মেয়ে নিয়ে বেশ ভাল দিনাতিপাত করছি,আর্থিক সচ্ছলতা তোমার চেয়ে ভাল,তবুও তোমার কথা ভীষন ভাবে মনে গড়ে কারণ তুমি যে আমার প্রথম স্ত্রী। কোন মানুষ তার কোন প্রথম কে ভুলতে পারেনা। তোমার এই দীর্ঘ স্মৃতি রোমন্থন করাতে তুমি ভেবনা আমার স্ত্রীর প্রতি আমার ভালবাসা কম তাই তোমার জন্য এটা নিরব আহাজারি,মোটেই তা নয়। তোমার কল্যাণার্থে আমার এই লেখা। আমি আজ একটা চরম কাজ সম্পাদন করতে চাই,যেটা আমার কাছ হতে তোমাকে মুক্তি দেবে। সময় ও সুযোগের অভাবে যেটা করতে পারিনি,তালাক দেয়ার কতরকম পদ্ধতি আছে আমার জানার দরকার নাই,আমি কোন পদ্ধতি অনুসরন না করে আজ তোমায় তালাক দিলাম। তালাক তালাক তালাক ,এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক।
No comments:
Post a Comment