প্রবাসী কল্যান মন্ত্রনালয়ের ওয়েটিং রুমে বসে আছে কয়েজন আগত লোক। সায়েদ
সোফায় বসে মাথাটা পিছনে হেলে টিভির দিকে একাগ্র চিত্তে তাকিয়ে আছে। সবাই
যার যার ধান্দায় ব্যস্ত। সবাই ওফিসিয়াল কাজে এসেছে কাজ শেষ সবাই চলে যাবে।
শুধু কতক্ষনে তাদের ফাইল হাতে নিয়ে ডাক দিবে এ চিন্তায় মশগুল। একটা লোক
সায়েদের সামনে দিয়ে চলে যেতে তার পা সায়েদের পা-তে স্পর্শ হল, সায়েদ তার
দিকে আড়াআড়ি ভাবে তাকাল, লোক্টি সরি বলে একটু সৌজন্য
বোধ দেখিয়ে চলে গেল। সায়েদের পাশে দুটি লোক ্বসে আছে, তারা আলাপ করছে- প্রথম জনে বলল, ভাই শুনেছেন কাল রাত একটা মারাত্বক রেল দুর্ঘটনা ঘটে গেল, দ্বিতীয় জন তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বলল, হ্যাঁ পত্রিকায় এসেছে, অনেক লোক নিহত হয়েছে, আর আহতের সংখ্যাত বাকি সবাই। সায়েদ তাদের আলাপে যোগ দিল, বোকার মত জানতে চাইল ভাই কোথায় হয়েছে বাংলাদেশে নাকি ইন্ডিয়ায়। প্রথম জন সায়দের বোকার মত প্রশ্নে তার দিকে ভ্র কুচকে তাকাল, বলল আপনি কোথায় আছেন, বাংলাদেশে আছেন নাকি ইন্ডিয়ায় চলে গেছেন। অকষ্মাত এমন প্রশ্নে সায়েদ থতমত খেয়ে গেল। একটু লজ্জা পেয়ে সোফা ছেড়ে বাইরের দিকে চলে গেল। বাইরের লোকগুলো ও একই আলোচনায় মত্ত। একজন পেপার খুলে সবাইকে দেখাচ্ছে, অন্য সবাই দেখছে আর আপ্সোস করছে, কেউ নিহতদের জন্য আশির্বাদ আর আহতেদের জন্য আরোগ্য কামনা করছে। সায়েদও প্রত্রিকার পাতায় ছবিগুলো দেখে খুব দুঃখ প্রকাশ করল।
কথায় বলে অশিক্ষিত লোক পশুর সমান। সায়েদ লেখা পড় কিছু জানেনা, এমনকি অ অক্ষরটা কেউ লিখে দিয়ে জিজ্ঞেস করলে বলতে পারবে না সেটা কি। সে শুধু জানে "সায়েদ" নামের এ তিন টি অক্ষর লিখতে। পাসপোর্ট আর ব্যংক একাউন্ট খোলার জন্য ছয় মাস ব্যয় করে অনেক কষ্টে শিখেছিল এই তিনটি অক্ষর। তাই হাতের কাছে পত্রিকা দেখেও সে কিছু বুঝতে পারল না, ট্রেন দুর্ঘটনার কথা মানুষের মুখে শুনেও গত সন্ধ্যায় যে তার বউকে ট্রেনে তুলে দিয়েছে সে কথা একবার ভাবলনা। বাংলাদেশের কোথায়, কোন ট্রেন, এবং কোন স্থানে দুর্ঘটনায় পরেছে সেটা কারো কাছে একবারও জানতে চাইল না। সায়েদ শুনেছে গত রাত ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে, তাহলে তার স্রী বাড়ী গেল কিনা সে প্রশন তার মনে একবারও উদয় হল না। এ মুহুর্তে তার সব মনোযোগ কুয়েত যুদ্ধ ফেরত হিসাবে সে এক লাখ বিশ হাজার টাকা পাবে তার দিকে। পৃতিবীর অন্য কিছু ভাবা তার দরকারই নেই। সে কিছুক্ষন বাইরে ঘুরে ফিরে আবার ওয়েটিং রুমে ফিরে এল। টিভি স্ক্রীনে আবার চোখ দিয়ে মাথা হেলিয়ে আলসে ভাবে টিভি দেখতে লাগল, কিছুক্ষন পর একজন পিয়ন এসে বলল, সায়েদ কে? সাহেদ বলল আমি। পিয়ন জানাল আপনার চেক পরশু পাবেন, আগামী কাল ব্যংকে যাবে আপনি এখন চলে যেতে পারেন। সায়েদ একটা চোট্ট হিসাব কষল, আজ বাড়ী গিয়ে পরশু আবার আসলে কত খরচ হবে, আর ঢাকায় থাকলে কত খরচ হতে পারে, হিসাবে দেখল থাকায় ভাল, সায়েদ ঢাকায় থেকে গেল।
সায়েদের বাবা একজন টেক্সী চালক, মাও একজন অশিক্ষিত গৃহীনি। সায়েদের জম্মের পর বাবা মা তাকে লেখাপড়া করাবার কোন চেষ্টাই করেনি। তাদের ইচ্ছা সে নিজেই ড্রাইভার বড় হলে তার সন্তানও ড্রাইভার হবে। অযথা আই এ বি এ পাশ করতে গেলে সময় এবং টাকা দুটারই ক্ষতি। সরকারই যেন তার পৃষ্ঠপোষকতা করছে, ড্রাইভারী শিখতে লাগে মাত্র তিন থেকে ছয় মাস, আর তার সরকারী স্কেল ১৩০০ টাকা, একজন মাষ্টার বা কেরানী হতে লেখা পড়া করে আই এ বা বিএ পাশ করতে হয়, সময় লাগে বার থেকে ষোল বছর কিন্তু তার বেতন স্কেল মাত্র ১০৫০ টাকা হতে ১২০০ টাকা। তাহলে কার মুল্য বেশী, ড্রাইভার নাকি মাষ্টার কেরানীর। সায়েদ প্রাপ্ত বয়স্ক হলে টেক্সী, কার এবং হেভীওয়েট গাড়ীর ড্রাইভারী শিখে নেয়। তারপর বিদশ চলে যায়। প্রথম দু বছরে সে লাখোপতি কে ছাড়িয়ে যায়। তারপর এসে ঈশিতাকে বিয়ে করে। বিয়ের আট বছরে আরো তিন বার বিদেশ আসা যাওয়া করে। এই আট বছরে মাত্র নয় মাস সে বাড়ীতে ছিল। দুটি কন্যা সন্তানের পিতা হয় সে। ইরাক কুয়েত যুদ্ধকালীন কুয়েত ফেরত দের সে দেশের সরকার বাংলাদেশের মাধ্যমে প্রদত্ত ক্ষতি পুরনের টাকা তুলতে সে ঢাকায় যায়।
পরের দিন সে ঢাকা থেকে গেল, তারপরের দিন এগারটায় সে তার টাকা বুঝে পেল। সেদিন সন্ধ্যায় সে ঢাকা থেকে বাড়ী যাত্রা করল। বাড়ী ফিরে সে কাউকে দেখতে পেলনা,মেয়েরা আগেই থেকে নানার বাড়ীতে থাকাতে তার ধারনা তার বউও বাপের বাড়ীতে আছে। সে কাপড় চোপড় না ছেড়ে শশুর বাড়ী চলে গেল। সেখানে গিয়ে ঈশিতাকে দেখতে না পেয়ে হতবাক হয়ে গেল। জানতে চাইল ঈশিতা আসেনি? শাশুড়ী জবাব দিল ঈশিতা তোমার সাথে গেছে তোমার সাথেইত আসবে। সায়েদ জবাব দিল আমিত সেদিনই তাকে ট্রেনে তুকে দিয়েছি। পরের দিন চলে আসার কথা। বাড়ীর সব লোক একত্র হয়ে গেল। একজন বলল কোন ট্রেনে উঠেছিল সে? সায়েদ জবাব দিল ট্রেনের নামত জানিনা, তবে সন্ধ্যায় ছটায় সেটা ছেড়েছে। অন্যজন বলল হ বুঝছি, গোধুলী সেটা সেদিন দুরঘটনায় পরেছে, অনেক লোক মারা গেছে।
তার কথা শুনে সায়েদ ধপাস করে বসে গেল, সবাই কান্না কাটি শুরু করল , মেয়েরা মা মা বলে কাদতে লাগল অনেকেই মেয়েদের কে মাতৃহারা হিসেবে মাথায় হাত বুলিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরল। এক সময় সবার কান্না থামিয়ে পরামর্শ করল, খুজে দেখতে। ঈশিতার চাচাত ভাই সায়েদকে নিয়ে স্থানীয় ষ্টেশনে গেল। ট্রেন্টি কোথা এক্সিডেন্ট হয়েছে সম্পুর্ন ঠিকান সংগ্রহ করল। দুর্ঘটনাস্থলে এর নিকট বর্তী ষ্টেশনে পৌছে সেখান থেকে কোন মানুষ্কে কোন মেডিকেলে নিয়েছে তা জেনে নিল। সব মেডিকেলে খুজে দেখল, কোথাও ঈশিতাকে জীবিত বা মৃত পেলনা। যাদের কে রেল কর্তৃপক্ষ সতকার করেছে তাদের তালিকা দেখল, কোথাও ঈশিতার নাম নেই। কোন আহত লোক আশে পাশে কোন বাড়ীতে আশ্রিতা আছে কিনা দেখার জন শেষে দুর্ঘটনাস্থলে এল,তারা আশে পাশে কোন বাড়ীই দেখতে পেলনা। এদিক ও দিক অনেক্ষন হেটে তারা একটা পথিক কে জিজ্ঞেস করল, দাদা সেদিন এক্সিডেন্টের পর কোন মহিলা কোন বাড়ীতে আশ্র্য নিয়েছে কিনা বলতে পারেন? লোক্টি জবাব দিল তাত জানিনা, এদিকে তেমন বাড়ী ঘর ও নেই, একটা মাত্র বাড়ী আছে তাও অনেক দূরে। আহত অবস্থায় একজন মেয়েলোক অতদুরে যাবে বা যেতে পারবে আমার মনে ছোয় না। লোক্টা বাড়ীটা দেখিয়ে দিয়ে চলে গেল। হ্যাঁ বাড়ীটা অনেক দূরে ধানের ক্ষেতের ঠিক মাঝে বাড়ীটা, চারিদিকে গাছগাছালীতে ঘেরা। অন্তত এখান থেকে মাইল দেড়েক হবে, যাওয়ার কোন তেমন রাস্তা নেই যেতে হলে ধানের আইলে আইলে যেতে হবে। চাচাত ভাই বলল, রাস্তাহীন সুদুর ওই বাড়ীতে রাতের বেলায় আহত অবস্থায় ঈশিতা সেখানে যাবে আমার মনে হয়না। সায়েদ বলল ঠিকই বলেছিস, তবুও একবার গিয়ে খুজে দেখলে ক্ষতি কি। দুজনে আইলে আইলে বাড়ীতার দিকে যেতে শুরু করল। প্রায় মাইল খানিক গিয়ে চাচাত ভাই বলল, আচ্ছা একটা কথা, যদি বেচে থাকত আশ্রয় নিলেও এতদিনে সে ফিরে যেতনা, নিশ্চয় ফুরে যেত। সায়েদে সাই দিল সেটা অবশ্যই ঠিক। তাহলে আমরা যাচ্ছি কেন। সায়েদ বলল না যাই। চাচাত ভাই চল ফিরে যায়। তারা দুজনে ঈশিতার খুব কাছে গিয়েও ফিরে আসল।
বোধ দেখিয়ে চলে গেল। সায়েদের পাশে দুটি লোক ্বসে আছে, তারা আলাপ করছে- প্রথম জনে বলল, ভাই শুনেছেন কাল রাত একটা মারাত্বক রেল দুর্ঘটনা ঘটে গেল, দ্বিতীয় জন তার মুখ থেকে কথা কেড়ে নিয়ে বলল, হ্যাঁ পত্রিকায় এসেছে, অনেক লোক নিহত হয়েছে, আর আহতের সংখ্যাত বাকি সবাই। সায়েদ তাদের আলাপে যোগ দিল, বোকার মত জানতে চাইল ভাই কোথায় হয়েছে বাংলাদেশে নাকি ইন্ডিয়ায়। প্রথম জন সায়দের বোকার মত প্রশ্নে তার দিকে ভ্র কুচকে তাকাল, বলল আপনি কোথায় আছেন, বাংলাদেশে আছেন নাকি ইন্ডিয়ায় চলে গেছেন। অকষ্মাত এমন প্রশ্নে সায়েদ থতমত খেয়ে গেল। একটু লজ্জা পেয়ে সোফা ছেড়ে বাইরের দিকে চলে গেল। বাইরের লোকগুলো ও একই আলোচনায় মত্ত। একজন পেপার খুলে সবাইকে দেখাচ্ছে, অন্য সবাই দেখছে আর আপ্সোস করছে, কেউ নিহতদের জন্য আশির্বাদ আর আহতেদের জন্য আরোগ্য কামনা করছে। সায়েদও প্রত্রিকার পাতায় ছবিগুলো দেখে খুব দুঃখ প্রকাশ করল।
কথায় বলে অশিক্ষিত লোক পশুর সমান। সায়েদ লেখা পড় কিছু জানেনা, এমনকি অ অক্ষরটা কেউ লিখে দিয়ে জিজ্ঞেস করলে বলতে পারবে না সেটা কি। সে শুধু জানে "সায়েদ" নামের এ তিন টি অক্ষর লিখতে। পাসপোর্ট আর ব্যংক একাউন্ট খোলার জন্য ছয় মাস ব্যয় করে অনেক কষ্টে শিখেছিল এই তিনটি অক্ষর। তাই হাতের কাছে পত্রিকা দেখেও সে কিছু বুঝতে পারল না, ট্রেন দুর্ঘটনার কথা মানুষের মুখে শুনেও গত সন্ধ্যায় যে তার বউকে ট্রেনে তুলে দিয়েছে সে কথা একবার ভাবলনা। বাংলাদেশের কোথায়, কোন ট্রেন, এবং কোন স্থানে দুর্ঘটনায় পরেছে সেটা কারো কাছে একবারও জানতে চাইল না। সায়েদ শুনেছে গত রাত ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে, তাহলে তার স্রী বাড়ী গেল কিনা সে প্রশন তার মনে একবারও উদয় হল না। এ মুহুর্তে তার সব মনোযোগ কুয়েত যুদ্ধ ফেরত হিসাবে সে এক লাখ বিশ হাজার টাকা পাবে তার দিকে। পৃতিবীর অন্য কিছু ভাবা তার দরকারই নেই। সে কিছুক্ষন বাইরে ঘুরে ফিরে আবার ওয়েটিং রুমে ফিরে এল। টিভি স্ক্রীনে আবার চোখ দিয়ে মাথা হেলিয়ে আলসে ভাবে টিভি দেখতে লাগল, কিছুক্ষন পর একজন পিয়ন এসে বলল, সায়েদ কে? সাহেদ বলল আমি। পিয়ন জানাল আপনার চেক পরশু পাবেন, আগামী কাল ব্যংকে যাবে আপনি এখন চলে যেতে পারেন। সায়েদ একটা চোট্ট হিসাব কষল, আজ বাড়ী গিয়ে পরশু আবার আসলে কত খরচ হবে, আর ঢাকায় থাকলে কত খরচ হতে পারে, হিসাবে দেখল থাকায় ভাল, সায়েদ ঢাকায় থেকে গেল।
সায়েদের বাবা একজন টেক্সী চালক, মাও একজন অশিক্ষিত গৃহীনি। সায়েদের জম্মের পর বাবা মা তাকে লেখাপড়া করাবার কোন চেষ্টাই করেনি। তাদের ইচ্ছা সে নিজেই ড্রাইভার বড় হলে তার সন্তানও ড্রাইভার হবে। অযথা আই এ বি এ পাশ করতে গেলে সময় এবং টাকা দুটারই ক্ষতি। সরকারই যেন তার পৃষ্ঠপোষকতা করছে, ড্রাইভারী শিখতে লাগে মাত্র তিন থেকে ছয় মাস, আর তার সরকারী স্কেল ১৩০০ টাকা, একজন মাষ্টার বা কেরানী হতে লেখা পড়া করে আই এ বা বিএ পাশ করতে হয়, সময় লাগে বার থেকে ষোল বছর কিন্তু তার বেতন স্কেল মাত্র ১০৫০ টাকা হতে ১২০০ টাকা। তাহলে কার মুল্য বেশী, ড্রাইভার নাকি মাষ্টার কেরানীর। সায়েদ প্রাপ্ত বয়স্ক হলে টেক্সী, কার এবং হেভীওয়েট গাড়ীর ড্রাইভারী শিখে নেয়। তারপর বিদশ চলে যায়। প্রথম দু বছরে সে লাখোপতি কে ছাড়িয়ে যায়। তারপর এসে ঈশিতাকে বিয়ে করে। বিয়ের আট বছরে আরো তিন বার বিদেশ আসা যাওয়া করে। এই আট বছরে মাত্র নয় মাস সে বাড়ীতে ছিল। দুটি কন্যা সন্তানের পিতা হয় সে। ইরাক কুয়েত যুদ্ধকালীন কুয়েত ফেরত দের সে দেশের সরকার বাংলাদেশের মাধ্যমে প্রদত্ত ক্ষতি পুরনের টাকা তুলতে সে ঢাকায় যায়।
পরের দিন সে ঢাকা থেকে গেল, তারপরের দিন এগারটায় সে তার টাকা বুঝে পেল। সেদিন সন্ধ্যায় সে ঢাকা থেকে বাড়ী যাত্রা করল। বাড়ী ফিরে সে কাউকে দেখতে পেলনা,মেয়েরা আগেই থেকে নানার বাড়ীতে থাকাতে তার ধারনা তার বউও বাপের বাড়ীতে আছে। সে কাপড় চোপড় না ছেড়ে শশুর বাড়ী চলে গেল। সেখানে গিয়ে ঈশিতাকে দেখতে না পেয়ে হতবাক হয়ে গেল। জানতে চাইল ঈশিতা আসেনি? শাশুড়ী জবাব দিল ঈশিতা তোমার সাথে গেছে তোমার সাথেইত আসবে। সায়েদ জবাব দিল আমিত সেদিনই তাকে ট্রেনে তুকে দিয়েছি। পরের দিন চলে আসার কথা। বাড়ীর সব লোক একত্র হয়ে গেল। একজন বলল কোন ট্রেনে উঠেছিল সে? সায়েদ জবাব দিল ট্রেনের নামত জানিনা, তবে সন্ধ্যায় ছটায় সেটা ছেড়েছে। অন্যজন বলল হ বুঝছি, গোধুলী সেটা সেদিন দুরঘটনায় পরেছে, অনেক লোক মারা গেছে।
তার কথা শুনে সায়েদ ধপাস করে বসে গেল, সবাই কান্না কাটি শুরু করল , মেয়েরা মা মা বলে কাদতে লাগল অনেকেই মেয়েদের কে মাতৃহারা হিসেবে মাথায় হাত বুলিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরল। এক সময় সবার কান্না থামিয়ে পরামর্শ করল, খুজে দেখতে। ঈশিতার চাচাত ভাই সায়েদকে নিয়ে স্থানীয় ষ্টেশনে গেল। ট্রেন্টি কোথা এক্সিডেন্ট হয়েছে সম্পুর্ন ঠিকান সংগ্রহ করল। দুর্ঘটনাস্থলে এর নিকট বর্তী ষ্টেশনে পৌছে সেখান থেকে কোন মানুষ্কে কোন মেডিকেলে নিয়েছে তা জেনে নিল। সব মেডিকেলে খুজে দেখল, কোথাও ঈশিতাকে জীবিত বা মৃত পেলনা। যাদের কে রেল কর্তৃপক্ষ সতকার করেছে তাদের তালিকা দেখল, কোথাও ঈশিতার নাম নেই। কোন আহত লোক আশে পাশে কোন বাড়ীতে আশ্রিতা আছে কিনা দেখার জন শেষে দুর্ঘটনাস্থলে এল,তারা আশে পাশে কোন বাড়ীই দেখতে পেলনা। এদিক ও দিক অনেক্ষন হেটে তারা একটা পথিক কে জিজ্ঞেস করল, দাদা সেদিন এক্সিডেন্টের পর কোন মহিলা কোন বাড়ীতে আশ্র্য নিয়েছে কিনা বলতে পারেন? লোক্টি জবাব দিল তাত জানিনা, এদিকে তেমন বাড়ী ঘর ও নেই, একটা মাত্র বাড়ী আছে তাও অনেক দূরে। আহত অবস্থায় একজন মেয়েলোক অতদুরে যাবে বা যেতে পারবে আমার মনে ছোয় না। লোক্টা বাড়ীটা দেখিয়ে দিয়ে চলে গেল। হ্যাঁ বাড়ীটা অনেক দূরে ধানের ক্ষেতের ঠিক মাঝে বাড়ীটা, চারিদিকে গাছগাছালীতে ঘেরা। অন্তত এখান থেকে মাইল দেড়েক হবে, যাওয়ার কোন তেমন রাস্তা নেই যেতে হলে ধানের আইলে আইলে যেতে হবে। চাচাত ভাই বলল, রাস্তাহীন সুদুর ওই বাড়ীতে রাতের বেলায় আহত অবস্থায় ঈশিতা সেখানে যাবে আমার মনে হয়না। সায়েদ বলল ঠিকই বলেছিস, তবুও একবার গিয়ে খুজে দেখলে ক্ষতি কি। দুজনে আইলে আইলে বাড়ীতার দিকে যেতে শুরু করল। প্রায় মাইল খানিক গিয়ে চাচাত ভাই বলল, আচ্ছা একটা কথা, যদি বেচে থাকত আশ্রয় নিলেও এতদিনে সে ফিরে যেতনা, নিশ্চয় ফুরে যেত। সায়েদে সাই দিল সেটা অবশ্যই ঠিক। তাহলে আমরা যাচ্ছি কেন। সায়েদ বলল না যাই। চাচাত ভাই চল ফিরে যায়। তারা দুজনে ঈশিতার খুব কাছে গিয়েও ফিরে আসল।
No comments:
Post a Comment